দিয়া : কাকু, কাকিমা, কেমন আছে সপ্না। ডাক্তার কী বলেছে কী হয়েছে ওর।
সপ্নার বাবা : শান্ত হ মা ডাক্তার এখনো সেভাবে কিছু বলেনি উনি চেকআপ করেছে, কিছু টেস্ট করতে দিয়েছে বলেছে বিকালে রিপোর্ট দেবে ততক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতেই হবে।
দিয়ার মা : কি জানেন তো দাদা আসলে স্বপ্ন অন্ত দিয়ার প্রাণ ও হাসপাতালে ভর্তি হলে, দৌড়ে ছুটে চলে এসেছে। কেনই বা আসবে না স্বপ্নাকে ছাড়া তো দিয়ার চলেই না।
সবাই বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এলো।
ডাক্তার : রোগের বাবা-মাকে আছে।
সপ্নার বাবা-মা : ডাক্তার আমরা। আমাদের মেয়ে ঠিক আছে তো ডাক্তার।
ডাক্তার : সরি বলতে খারাপ লাগছে বাচ্চা মেয়ে। আসলে ওর দুটো কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। ওকে একটা কিডনি কেউ ডোনেট না করলে বা কিডনি না পাওয়া গেলে বাঁচানো সম্ভব না।
সপ্নার মা- : না এসব কী বলছেন আপনি। এসব বলবেন না 🥹🥹🥹🥹🥹🥹🥹🥹🥹 আপনি আমার দুটো কিডনি নিয়ে আমার মেয়েকে দিয়ে বাঁচিয়ে দিন ।
দিয়ার মা : শান্ত হন দিদি, সব ঠিক হয়ে যাবে, একটা উপায় ঠিক বের হবে।
ডাক্তার : দেখুন এভাবেই তো বললেই একজনের কিডনি নেওয়া যায় না কিডনি ম্যাচিং করার একটা ব্যাপার আছে।
আগে আপনাদের টেস্ট করে দেখতে হবে কার সঙ্গে ম্যাচিং করে। তারপর না হয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। তুমি যা করার খুব দ্রুত করতে হবে কারণ দুটো কিডনি ড্যামেজ।
দিয়া : ডাক্তার কাকু, তুমি আমাকে আগে টেস্ট করে দেখো না, আমার সঙ্গে ম্যাচ করে কিনা।
ডাক্তার : কিন্তু তুমি তো বাচ্চা তোমার কিডনি নেওয়াটা রিক্স হয়ে যাবে।
দিয়া : কাকু আমি এতকিছু বুঝি না আমি শুধু চাই স্বপ্না আমার বেস্ট ফ্রেন্ড, আমার সঙ্গে থাকুক আমরা আবার সেই আগের মত একসঙ্গে স্কুলে যাব, ঘুরতে যাব, মজা করব। 😭😭😭😭😭😭😭 আমি ওকে হারাতে চাই না।
তাছাড়া কত মানুষই তো আছে যারা একটা কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকে, আমিও একটা কিডনি নিয়ে বাঁচবো স্বপ্ন ও।
দিয়া : মা তুমি নিশ্চয়ই জানো সপ্না আমার কাছে কি, ওর কিছু হয়ে গেলে আমি কখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না তাই তুমি বাবা নিশ্চয়ই আমাকে বাধা দেবে না।
দিয়ার বাবা : নারে মা আমি কখনোই তোকে বাধা দেবো না তোদের বন্ধুত্বের অমর্যাদা করে , নিজের কাছেই নিজে অকৃতজ্ঞ হতে পারব না।
ডাক্তার সপ্নার বাবা, আপনার মা, সবাই টেস্ট করলো কিন্তু ওনাদের কিডনির সঙ্গে স্বপ্নার কিডনি ম্যাচ করল না, সবশেষে দিয়ার কিডনি ম্যাচ করলো। দিয়া স্বপ্নাকে একটা কিডনি ডোনেট করলো।
দিয়া : সপ্না তুই এখন ঠিক আছিস তো।
সপ্না: তুই আমাকে নিজের একটা কিডনি দিয়েছিস তারপরও আমি ঠিক না থাকলে হয়। তুই আমার জন্য তোর জীবনের এত বড় রিক্স নিলে এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিলি দিয়া।
দিয়া : বা রে তুই আবার বেস্ট ফ্রেন্ড না। তোকে আমি ভালোবাসি, তুই যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাস তাহলে কি করে হবে। তুই আমি একসঙ্গে বাঁচবো, আবার আগের মত একসঙ্গে স্কুলে যাব, ঘুরতে যাব, দুষ্টুমি করবো।
সপ্না : জানিস দিয়া তোকে যত দেখছি তত অবাক হয়ে যাচ্ছি, কেউ তার বেস্ট ফ্রেন্ডের জন্য এতটা করে তোর সাথে তোমার রক্তের সম্পর্ক নেই তবুও তুই আমার জন্য🥹🥹
দিয়া : সপ্না তুই কান্না করবি না, তোর সাথে হয়তো আমার রক্তের সম্পর্ক নেই কিন্তু আত্মা সম্পর্ক তো আছে।
সপ্না : হুম 😊, তোকে বলেছিলাম না যে হয়তো আমার জীবনের তুই আমাকে একদিন এমন গিফট দিবে আমি সারা জীবন তোর কাছে ঋণী হয়ে থাকবো। দেখলি তো
তোর কাছে আমি সারাজীবন ঋনী হয়ে থাকবো রে।
দিয়া : বন্ধুত্ব আবার ঋন কিরে। চুপ করে থাকবি।
সপ্না : সত্যি দিয়া তোর মত বেস্ট ফ্রেন্ড যদি সবার হতো, 😊 তোর আর আমার বন্ধুত্ব তো এক যুগের রে 😊।
দিয়া : হ্যাঁ এখন তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে হবে তোকে, কারণ সামনে তো আমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা। 😊😊
(লেখিকা আরাধ্যা রায়)
( মুখে বললেই কিন্তু বেস্ট ফ্রেন্ড হওয়া যায় না, বা কাউকে ভালোবাসা যায় না, ভালোবাসাটা না ভেতর থেকে আসে যেটাকে কখনো আটকে রাখা যায় না। প্রত্যেকের ভালোবাসা হোক অবিরাম, যেটার কোন শেষ থাকবে না, আর প্রত্যেকের জীবনে একজন এমন বেস্ট ফ্রেন্ড হোক এই কামনাই করি)
★ গল্পটা কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করবে আর তোমাদের যদি বেস্ট ফ্রেন্ড থাকে অবশ্যই এই গল্পটা পড়ে শোনাবে অথবা গল্পটা পড়তে বলবে। ❤️
1 মন্তব্যসমূহ
গল্পটা পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারলাম
উত্তরমুছুন