পৃথিবীতে জন্ম নিলে হয় বড়লোক হয়ে জন্ম নেওয়া ভালো না হলে সবচেয়ে গরীব হয়ে কারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলে জীবন কী সেটা বেশি ভালো করে উপলব্ধি করা যায়। যায় হোক জন্ম সৃষ্টিকর্তার হাতে আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী তো হবে না। 

মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের দুচোখ ভর্তি সপ্ন সেই সপ্ন পূরণে হাজারো ও বাঁধা। জীবন এতো সহজ নয় সত্যি কথা টা ১০০% সত্যি আমি নিজে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম না নিলে কখনো বুঝতেই পারতাম না যে মধ্যবিত্ত হয়ে জন্ম নিলে কী কী হয়।

জীবনের পথ চলা ওতো সহজে কখনো হয় না পথে চলতে গেলে আগে পথ চিনতে হয় তারপরে। মধ্যবিত্ত হয়ে জন্ম নেওয়া টা ভুল নয়। ভুল তো সেটা যখন মধ্যবিত্ত দের চোখে অনেক সপ্ন অথচ পূরণের পথে অনেক বাধা এমনকী একটা সময় গিয়ে ভাগ্যেও কেমন যেন বেইমানি করে বসে। সত্যি জীবন টা বড় অদ্ভুত তবে জীবন থেকে অনেক কিছু শেখার বিষয় আছে। 

নীলা আমার নাম আমি মধ্যবিত্ত পরিবারেই বড়ো হয়েছি কিন্তু কখনো অতি অভাব জিনিস সেভাবে টের পাইনী ছোট থেকে। কিন্তু, এখন আমার বয়স ২৪ এখন বুঝতে পারি মধ্যবিত্ত কাকে বলে। বাবার বয়স হয়েছে এখন আগের মতো কাজ করতে পারে না, আমার ছোট ২টা বোন আছে, ওরাও লেখাপড়া করে বাবা একা কীভাবে সব চালাবে তাই টিউশন পড়ানো শুরু করলাম লেখাপড়া পাশাপাশি যাতে করে বাবার অনন্ত আমার পড়ার খরচ টা না দিতে হয়। কিন্তু বাবার সাহায্য করতে গিয়ে আরো সম্মান নষ্ট হয়ে গেলো। কারণ আমি অনেক গুলো টিউশন পড়াতাম তার মধ্যে একজনকে বাড়িতে গিয়ে পড়াতে হতো। ঘটনাক্রমে সেই বাড়ির একটা ছেলে আমাকে পছন্দ করতো, সে আমাকে বলে কিন্তু আমি কিছু তেই রাজি হই না তার সাথে রিলেশন করতে তখন সে আমার বিরুদ্ধে তার পরিবারের কাছে আজে বাজে কথা বলে যার ফলে তারা আমাকে অপমান করে আর তাড়িয়ে দেই তাদের বাড়ি থেকে সঙ্গে আমার বাবার শিক্ষা দেওয়া নিয়ে কথা তোলে। যার ফলে আমার বাবার মান সম্মান টাও নষ্ট হয়ে যায়। কী করবো বুঝতে পারছি না যার ফলে ভাবলাম না টিউশন পড়ানো তো আর হবে না তার থেকে বরং চাকরি খুঁজি চাকরি পেলে সেটাই ভালো হবে পড়াশোনা করতে পারবো সঙ্গে চাকরি সেই রকম চাকরির খোঁজ করতে বেরিয়ে পড়লাম। কিছু যেখানে ই চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যায় সেখানেই টাকা লাগবে বলে কিন্তু কীভাবে টাকা দিবো আমি আমার নিজের ই তো টাকা লাগবে যার জন্য চাকরি খুঁজছি, অবশেষে একটা চাকরি পেলাম কিন্তু চাকরি টা আমার জন্য নয় হয়তো বা কপিশপে একটা ওয়েটার এর কাজ বাবা রাজি হলো না কারণ আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে তার ওপর অবিবাহিত, তাই বাইরে গিয়ে একটা কপিশপে  কাজ করতে দিতে সে কিছুতেই রাজি নাকিছু দিন পর আমার একটা চাকরির ইন্টার ভিউ এর জন্য কল এলো আমি তো মহা খুশি ভাবলাম ভগবান মনে হয় এবার আমার দিকে মন তুলে চেয়েছেন। কিছু  ইন্টার ভিউ শেষে ওনারা একটা কথা ই বললেন যে তুমি সব দিক থেকে ঠিক ছিলে কিন্তু তোমার ট্যােটাস এর সাথে এখানে যারা কাজ করে তাদের ট্যােটাস মিল হবে না, হয়তো তুমি যে ফ্যামিলি থেকে বিলং কর সেটা দাঁড়িয়ে তুমি ঠিক কিন্ত আমাদের এখানে চাকরির জন্য তো না। শুনে আমি একটু অবাক হয়নী, আমার একটুও খারাপ লাগেনী করণ বর্তমানে যুগে টাকা, ট্যােটাস সুন্দরী এগুলো না হলে চাকরি খুব কম লোক ই পায়। বাড়ি এসে দেখি আমার মাসি এসেছে তার সঙ্গে ৩জন লোক খোঁজ নিয়ে পড়ে জানতে পারলাম আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছে । সত্যি তো ২৪ বছর বয়স আমার মা বাবার ঘাড়ের উপর বসে বসে খাচ্ছি কোনো কাজ করি না আর কতদিন আমাকে রেখে দেবে। পাত্রপক্ষ আমাকে দেখে পছন্দ হলো। আর কী ছেলে ভালো চাকরি করে। 

কিছু দিন পর বাবা আর আমার আত্মীয়রা গিয়ে ছেলেকে দেখে আসলো তার সঙ্গে আশীর্বাদ টার করে আসলো। আমার ইচ্ছে সপ্ন সব শেষ হয়ে গেলো জীবনে না কিছু পেলাম না কাউকে দিতে পারলাম। 

ছোট থেকে একটা কথায় শুনে আসছি আমি মধ্যবিও পারিবারের মেয়ে আমার কোনো কিছু কারার আগে একবার না দশবার ভাবতে হয়। আজ সব ভাবে যেমন বিয়ে করছি 😊।  ও একটা কথা তো বলতে ভুলেই গেছি আমার শশুরবাড়ির লোক বলেই দিছে তাদের বাড়িতে গেলে আমাকে চাকরি পেলেও করতে দেবে না কারণ আমর স্বামীর নাকি পছন্দ না এসব চাকরি করা। সে চাকরি করে যা দরকার, যা চাহিদা সে সব পূরণ করতে আমার চাকরি করে কী লাভ। আর কী সপ্ন যেটুকু বেঁচে ছিলো তাও শেষ হয়ে গেলো।  

আমার কেমন যেন বেঁচে থাকার ইচ্ছে টা ভেতর থেকে চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু আমার তো ভুললে চলবে না আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে এটাই তো আমার জীবন। 🙂

 

লেখিকা আরাধ্যা রায় (🤷‍♀️🤷‍♀️🤷‍♀️🤷‍♀️🤷‍♀️)

নতুন নতুন গল্প পড়তে আমাদের অপরিচিতা ব্লগার এর সঙ্গে থাকুন । ধন্যবাদ সবাইকে ☺️