পরশু দিন (বিকাল:৪টা সময়)
লাবণ্য : আবীর এসেছো তুমি আজ অনেক কথা বলার আছে তোমাকে?
আবীর : আমিও তো বলতেচাই আর শুনতেও।
লাবণ্য : তুমি বিদেশে যাওয়ার ঠিক আগের দিন ঠিক, এই জায়গায় দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করছেলে তখন সবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে তোমার পড়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার দিন ঠিক হয়ে গেছিলো তখন। আমি বলেছিলাম তুমি যা শুনতে চাও সেটা আমি তুমি বাড়ি ফিরলেই বলবো। আজ সেই দিনটা
আবীর : জানিনা তোমার উত্তর কী হবে লাবণ্য তব,সত্যি বলতে এতোদিন তোমার উত্তরের অপেক্ষা করেছি আমি সাথে তোমারও।
লাবণ্য : আবীর সেদিন তুমি জানতেচেয়েছিলে আমি তোমাকে ভালোবাসি কিনা। হ্যাঁ আবীর আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আর এই ৪বছর তোমার সাথে আমার কথা হতো না, দেখা হতো না কিন্তু আমি তোমায়ই ভালোবেসে গেছি আর অপেক্ষা ও করেছি।
আবীর: তুমি সত্যি বলছো লাবণ্য ।
লাবণ্য : হুম। স্কুলের ১ম থেকেই আমিও তোমাকে পছন্দ করতাম কিন্তু আমি হেডস্যারএর মেয়ে তাই কীভাবে বলবো, তাই বলতে পারিনী বাবার ভয়ে আর সম্মান এর কথা ভেবে। ১৪ ফেব্রুয়ারিতে, সবাই তার প্রিয় মানুষ কে গোলাপফুল দেয় কিন্তু, আমি ভয়ে দিতে পারিনী তাই তো ওই লজ্জাবতী গাছটা কিনে দিছেছিলাম তোমায় ওইদিন। আমি শুধু তোমার আসার দিন গুনে গেছি শুধু। আর দেখ ভাগ্য আমার এতোকিছুর পর ও তুমি এলো সব ঠিক হয়ে গেল তাও তোমাকে নিজের করে পেলাম না 
আবীর :কেন, কী হয়েছে লাবণ্য বলো।
লাবণ্য : তুমি আসার কিছুদিন আগে, আমার আশীর্বাদ হয়ে গেছে। বাবার বন্ধুর ছেলের সঙ্গে ছেলে কলেজের প্রোপ্রেসর, বাবাকে বলছে আমার পড়া শেষ হলে আমাকেও ওই কলেজে চাকরি সুযোগ করে দেবে কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়ালাম
আবীর: ওহ তাহলে সামনেই তোমার বিয়ে তাই না। লাবণ্য কাঁদছো কেন?
লাবণ্য :খুব ভালোবাসি তোমায় জানো কিন্তু বাবার কথা ভেবে সেদিন যেমন স্কুলে তোমাকে পছন্দ করি বলতে পারিনী।ঠিক সেভাবে আশীর্বাদের আগেও বলতে পারিনী তোমাকে ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি।
আবীর :ধুর পাগলি কেঁদো না । তুমি আমাকে ভালো বাসছো এটায় অনেক। দেখছো আমি শুনে খুশি হয়েছি। তোমার ভালোবাসা নিয়েই আমি সারাজীবন কাটিয়ে দিবো। তুমি ভালো থাকলে আমি ও ভালো থাকবো
লাবণ্য : একটা অনুরোধ করবো তোমায়।
আবীর : অনুরোধ কেন বলছো বলো কী
লাবণ্য : তুমি বাবার প্রিয় ছাত্র, আমার বিয়েতে বাবা তোমাকে নেমন্তন্ন করবে, দয়া করে এসো না আমি তোমার সামনে 
আবীর: এই কথা শোন তুমি না বললেও আমি কখনোই যেতাম না কারণ নিজের প্রিয় মানুষ অন্য হতে দেখা যে কতটা যায় হোক আজই তোমার সাথে আমার শেষ দেখা হয়তো, ভাগ্যে থাকলে আবার ও দেখা হবে কিন্তু তখন এই লাবণ্য কে না অন্যের বউ হিসাবে ।যায় হোক সব সময় ভালো থেকে, সাবধানে থেকো। বলছি শোন না এখন আমি আসি মা চিন্তা করছে হয়তো 
লাবণ্য : হুম মাপ করে দিও আমাকে 
(১মাস পর)
আবীর : আজ তোমার বিয়ে কনে সাজে তোমায় কেমন লাগছে 
মা: কী রে একা একা, কী বকছিস বাবু?
আবীর: কই কিছু না তো মা।
মা: আজ কী হয়েছে দেখেছিস আমি তো অবাক সকালে।
আবীর: কেন কী হয়েছে
মা : তোর প্রিয় লজ্জাবতী গাছটায় আজ ১ম ফুল, ফুটলো বাইরে গিয়ে দেখ কত সুন্দর লাগছে গাছটা সোভা, বাড়ে গেছে গাছের।
আবীর : আচ্ছা, ( মনে মনে আজ তো লাবণ্যের ও বিয়ের ফুল ফুটলো গো মা)
মা: কী রে কী ভাবছিস, কী যে হয়েছে তোর বাবু আজ তোর চাকরিতে জয়েন্ট করার দিন আর আজই কেমন লাগছে তোকে।
আবীর : কিছু হয় নী মা আমার আমি একদম ঠিক আছি তুমি যাও আমি রেডি হয়ে আসছি। বেরবো না।
মা: আচ্ছা
বাবা: শোন বাবা, ভালো ভাবে মন দিয়ে কাজ করবে আর সাবধানে থাকবে একদম চিন্তা করবে না আমাদের জন্য।
মা : হুম বাবু, ঠিক বলছে তোর বাবা এখন তুই বিদেশে না নিজের দেশেই শুধু কয়েক মাইল দূরে থাকবি মাএ।আর আমি তোর বাবা মাঝে মাঝে গিয়ে দেখা করে আসবো
আবীর : কী হলো তুমি আবার কান্না করছো ।আসছি মা বাবা সাবধানে থেকে।
বেড়িয়ে গেটের সামনের এসে লজ্জাবতী গাছটার দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিল জোরে চিৎকার করে বলি হে, লজ্জাবতী বলতে পারো ভাগ্য জিনিস টা এমন কেন সত্যিকারের, পবিত্র ভালোবাসাকে কেন এবারে হারিয়ে দেই
 
লেখিকা ( আরাধ্যা)