জীবনে ভালো থাকা কী খুব জরুরি নাকি একজন ভালো মানুষ হওয়ার জরুরি, সত্যি বলতে জীবনে ২ টোই জরুরি ভালো থাকা এবং ভালো মানুষ হওয়ার। কিন্তু বর্তমান যুগে দাঁড়িয়ে ভালো মানুষ হওয়ার এবং ভালো থাকা একসাথে কখনোই সম্ভব নয়। যে ভালো থাকবে বলে ঠিক করছে সে ভালো থাকার পিছনে ছুটতে, আর ছুটতে ছুটতে সে এমন একটা জায়গায় পৌছে যাচ্ছে যে সে আর ভালো মানুষ হয়ে থাকতে পারছে না।



আরও সহজ করে বুঝিয়ে দিই ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে একজন মানুষের ভালো থাকার জন্য সবচেয়ে আগে কী প্রয়োজন অনেক অর্থ এখন যার অনেক অর্থ আছে তার সম্মান আছে, আদর আছে, ক্ষমতা আছে, স্বাধীনতা আছে, মোটামুটি বলা চলে যার অনেক অর্থ আছে সে সমাজে, পরিবারে ভালো । কিন্তু একটা মানুষ যখন এই ভালো থাকার জন্য অর্থের পেছনে ছুটতে থাকে তখন সে আস্তে আস্তে আর চাইলেও ভালো মানুষ হয়ে থাকতে পারে না। এই অর্থের লোভ তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে। আরও চাই আমার আরো চাই এই ভাবনা তাকে আস্তে আস্তে পুরো মনুষ্যত্বকে শেষ করে দিয়ে একটা অমানুষে পরিণত করে।

লোভ আর হিংসা মানুষকে অমানুষে পরিণত করার জন্য কী যথেষ্ট নয়। বর্তমানে পৃথিবীতে অমানুষ সংখ্যা কতটা বেরে গেছে সেটা প্রতিদিন এর টিভিতে নিউজ দেখলে আর খবরের কাগজ পড়লে বোঝা যায় কত মেয়ে প্রতিদিন ধর্ষিত হয়ে অসহায় হয়ে সুইসাইড করছে। আরো ভালো অমানুষের প্রমাণ তো আমরা বৃদ্ধাআশ্রম এ গেলে পেয়ে যাব।

সত্যি যুগের সাথে সাথে মানুষ ও কেমন যেন পাল্টে যাচ্ছে। ভালো থাকার জন্য কী সত্যি অমানুষে পরিণত হতে হবে। ভালো মানুষ হয়ে কী সত্যি ই ভালো থাকা যায় না। নিজের যতটুকু অর্থ প্রয়োজন সেইটুকু দিয়ে কী ভালো থাকা যায় না। কী দরকার এতো অর্থের যে অর্থের পিছনে ছুটে মানুষ থেকে অমানুষে পরিণত হতে হয়।

এই তো ছোট্ট জীবন আমাদের। আমারা কে কদিন বাঁচবো কেউ জানি না। যার যখন ডাক আসবে তাকে তখন ই এই পৃথিবী, এতো অর্থ, ধন,সম্পদ সবছেড়ে চলে যেতে হবে। আমারা সবাই তো মাত্র ২দিনের অতিথি এই পৃথিবীতে।
কী লাভ এতো অর্থের, তার থেকে যেভাবে ভালো মানুষ হয়ে ভালো থাকা যায় সেটাই জরুরি নই।
আমাদের দেহে যত সময় প্রাণ করে যত সময় আমারা জীবিত। প্রাণটা দেহ থেকে চলে গেলেই হয়ে যাব মৃত। মৃত্যুর ২/৩দিন পর তোমাকে আর কেউ মনে রাখবো না কেউ তোমার কথা উচচরণ ই করবে না হ্যাঁ এটাই জীবন।

যত সময় তুমি বেঁচে আছো তত সময় তোমার পরিবার, সমাজ, তোর ধর্ম, জাত, সব আছে কিন্তু তুই মৃত মানে তোর কোনো কিছু নেই সব শেষ। তুমি যখন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে তখন কিছু তোর সঙ্গে তোর সমাজের লোক, পরিবারের লোক কেউ যাবে না তোমার গায়ে তোমার ধর্ম বা জাত লেখে দেওয়া হবে না কিন্তু তোমরা সঙ্গে যাবে কী জানো কর্ম, তুমি পৃথিবীতে এতোদিন কী কী কর্ম করছো সেটা।
একটা উদাহরণ দিই তোমাদের মনে করো খারাপ কাজ করে লোক ঠকিয়ে তোমার অনেক টাকা পয়সা আছে। টাকার জন্য তোমার অনেক ডাক নাম নামে তুমি বড়লোকদের খাতায় পড় তাই। হঠাৎ তুমি মারা গেলে তখন যাদের তুমি ঠকিয়ে এতো বড়লোক হয়েছে সেই মানুষ গুলো কী বলবে জানো বলবে ভালো হয়েছে তুমি মারা গেছে না জানি বেঁচে থাকলে আর কত মানুষে ঠকাতো। আর তোমরা টাকা পয়সা কী তোমার সঙ্গে দিয়ে দিবো তোমার পরিবার কখনোই না। কিছু দেবে না তোমার সঙ্গে তুমি একা এসেছো তোমাকে একাই যতে হবে পৃথিবীর ছেড়ে কেউ সঙ্গে যাবে না কিছু দেবেও না তোমার সঙ্গে না জমি, না বাড়ি, গাড়ি না টাকা পয়সা।

তাহলে কী লাভ বলো এতো লোভ হিংসা জাত পাত অর্থের পিছনে ছুটে তার থেকে ভালো কর্ম করে ভালো মানুষ হয়ে ভালো ভাবে থাকা কী সুন্দর নই।

 লেখিকা ( আরাধ্যা রায়)