২ বছর হলো আমার বিয়ে হয়েছে আর ৮মাস হলো আমার স্বামি মারা গেছে রোড এক্সিডেন্টটে। এখন বড্ড একা লাগে। শশুরবাড়িতে থাকি, প্রাইমারি স্কুলে একটা চাকরি পেয়েছি।
আমি মৌ এই গল্পে নায়িকা ও আমি খল নায়িকাও আমি আজ আমার বোনের বিয়ে বোনরা গ্রামে থাকে সেখানেই যাচ্ছি । গল্পটা বলতে বলতে যায় তোমাদের
★★ রেখাপুর গ্রাম আমার কাকার বাড়ি আমরা শহরে থাকি। ২বছর আগে আমার কলেজের ছুটেতে গ্রামে এসেছিলাম আমি মা বাবা সঙ্গে। ওখানে, শুভ নামে একটা ছেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল মাএ ২০দিনের পরিচয় কারণ আমারা ছিলামই ২০/২৫ দিন। শুভ গ্রামের খুব ভালো ছেলে সবাই ওকে ভালো বাসে গ্রামে। কাকাদের বাড়ির থেকে বেশিদূর না ওদের বাড়ি। আমি গ্রামে যাওয়ার ২/৩দিন পর আমার সাথে ওর দেখা হয়। পুরো গ্রামটা ঘুরিয়ে দেখায় ছিল ও আমাকে গ্রামে আখের রস, মধু, নতুন নতুন অনেক জিনিস আমাকে খাইয়েছে যেগুলো আমি কোনোদিন ও খায়নী। ওর সাথে বেশির ভাগ সময়ই মিসতাম আমি ও কাকাদের বাড়ি আসতো বার বার, রাতে উঠানে বসে গল্প করতাম আমাকে ভুতের গল্প শুনাতো অবশ্য আমার কাকার মেয়েও থাকতো।
এভাবে ৯/১০ দিন কেটে গেল আমার ও খুব ভালো লাগছিলো গ্রামের পরিবেশ তবে ভালো বেশি লাগার কারণ বোধহায় শুভ ছিল । আস্তে আস্তে আমার শুভকে ভালো লাগতে শুরু করলো ওকে না দেখলে আমার ভালো লাগতো না। একদিন মা, কাকি, বোন আমি গ্রামের একটা মন্দিরে পূজা দিতে যাব ঠিক তখন শুভ কাকাদের বাড়ি এলো। জোর করেই আমি নিয়ে গেলাম আমাদের সাথে মন্দিরে। মা, কাকি, পূজা দিচ্ছিলো মন্দিরে আমি বোন আর শুভ বসে গল্প করছিলাম।
মা এসে আমাকে একটা সুতা মানে কবজ দিলো বললো এটা হাতে বাঁধ। আমি বললাম দেও আমি বেধে নিবো। মা, কাকি বোন আগে হাটছিল আমি আর শুভ পিছনে। আমার হাতে থাকা কবজটি আমি শুভর হাতে বেঁধে দিলাম আর বললাম এটা কখনো খুলবে না তুমি ঠিক আছে এটা আমার স্মৃতি মনে থাকে যেন । শুভ বললো ঠিক আছে। আমি বাড়ি চলে আসার ৪/৫ দিন আগে শুভ একদিন আমাকে ডেকে বললো, মৌ তোমাকে না আমি ভালোবেসে ফেলেছি তুমি আমার বউ হবে হয়তো আমি চাকরি করি না তবে আমি তো একটা দোকানে থাকি তুমি সবই জানো প্রতি মাসে আমার ২০হাজার টাকা দেয় দোকান থেকে । আমার মনে হয় আমি তোমাকে ভালো রাখতে পারবো। আমি শুনে হেসে বললাম শুভ মাথা ঠিক আছে তোমার কী বলছো তুমি আমিও তোমাকে পছন্দ করি কিন্তু তার জন্য বিয়ে করতে হবে আর ভালোবাসবো তোমাকে সত্যি শুভ বললো কেন আমাকে ভালোবাসা যায় না আমি বললাম হুম যায় কিন্তু আমি কোথায় আর তুমি কোথায় তুমি কীভাবে আমাকে ভালোবাসো এটা বলার সাহস পেলে। আমার সঙ্গে সত্যি তোমার যায়। তোমরা গ্রামের মানুষ খুব বোকা জানো একটু ভালো ভাবে মিসলেই মাথায় ওঠে বসো। শোন ৪/৫দিন পর আমি চলে যাব আর আমি চাইনা এসব বিষয় কোনো কথা ওঠুক শুভ আমাকে বললো মৌ বিশ্বাস কর সত্যি খুব ভালোবেসে ভেলেছি। তুমি ছাড়া আমি সত্যি থাকতে পারবো না। আমি বললাম থামো তো আর তোমাকে বিয়ে করে আমি আমার জীবন নষ্ট করবো ভাবলে কী করে। ৪/৫দিন পর আমারা শহরে ফিরছি শুভ অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি বললাম সব ভুলে যাও আর ভালো থেকো
দেখলে গল্প টা বলতে বলতে গ্রামে পৌঁছে গেলাম। গাড়ি থেকে নামলাম তারপর যা হলো গ্রামের কিছু লোকজন একটা পাগলের পিছনে ছুটছে। পাগল টা এসে আমাকে দেখে থেমে গেল পাগলটাকে দেখতে এতোটাই ভয়ংকর লাগছে আমার নিজের ই দেখে ভয় লাগলো। হঠাৎ দেখলাম পাগলটার হাতে একটা কবজ আমার বুকের মধ্যে একটা নাড়া দিয়ে উঠলো আমি বললাম শুভ
শুভ বললো তুমি কে গো শহরে মেম সাহেব
গ্রামের লোকজন বললো ও পাগল হয়ে গেছে ওর মাথা ঠিক নেই ওর কথায় কিছু মনে করো না আমি বললাম কীভাবে পাগল হলো? একজন বললো একটা শহরের মেয়েকে ভালোবোসেছিল, শহরে মানুষ ওর মতো গ্রামের ছেলেকে ভালোবাসবে ছেড়ে চলে যায় সে শহরে। তারপর থেকে মদ, সিগারেট ,খেত প্রচুর আর সুচ ও নিতো শরীরলে। আস্তে আস্তে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে পাগল হয়ে গেছে।
কথা গুলো শুনে নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল , কেন জানিনা কান্না ও পাচ্ছিল। সত্যি আমি শুভর জীবনের নায়িকা আবার খল নায়িকাও যে কিনা ওর সুন্দর জীবন টা কে নষ্ট করলাম।
লেখিকা (আরাধ্যা)
0 মন্তব্যসমূহ